পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)
প্রতিক্ষণ ডেস্ক
আজ ১২ রবিউল আউয়াল শুক্রবার। পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)। আজ থেকে ১৪শ ৪৫ বছর আগে অর্থাৎ ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল মাসের সোমবার মক্কার বিখ্যাত কুরাইশ বংশে মা আমিনার গর্ভে জন্ম গ্রহণ করেন হযরত মুহম্মদ (সা.)। ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল মাসের সোমবার পৃথিবী ছেড়ে চলে যান তিনি। হযরত মুহাম্মদ (সা.) হলেন শেষ নবী এবং সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব। তাই তাঁর জন্ম ও ওফাত দিবস ১২ রবিউল আউয়াল মুসলমানদের কাছে একটি পবিত্র দিন। মুসলমানরা যথাযথ ধর্মীয় গাম্ভীর্যের সাথে দিনটি পালন করেন।
মহানবী (সা.) এর জন্মের আগেই মারা যান তার পিতা আব্দুল্লাহ। জন্মের পর মাত্র ৬ বছর বয়সে মা আমিনাকেও হারান তিনি। তখন তাঁকে তাঁর দাদা আব্দুল মুত্তালিব লালন-পালন করেন। সেই আশ্রয়ও বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। মারা যান দাদা আব্দুল মুত্তালিবও। তারপর চাচা আবু তালিব তাঁকে দেখাশোনা করেন।
বাল্যকালে পারিশ্রমিকের বিনিময়ে অন্যের বকরি-ভেড়া চড়াতেন মহানবী (সা.)। রাখাল থাকা অবস্থাতেই তাঁর মাঝে চারিত্রিক দৃঢ়তা, বিশ্বস্ততাসহ অনেক গুণ প্রকাশ পেতে থাকে। আল্লাহ হযরত ঈসাকে (আ.) পৃথিবী থেকে তুলে নেওয়ার পর দীর্ঘদিন কোন নবী-রাসূল না থাকায় পাপের অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল দুনিয়াবাসী। তখনকার সেই যুগকে বলা হত ‘আইয়ামে জাহিলিয়া যুগ’ বা ‘অন্ধকার যুগ’। এমন যুগেও মুহম্মদ (সা.) এর উন্নত চরিত্রের জন্য তাঁকে আল-আমিন অর্থাৎ বিশ্বাসী উপাধিতে ভূষিত করে আরববাসী।
৬৩২ খ্রিস্টাব্দে হজ্জ পালনের উদ্দেশ্যে মদিনায় গমন করেন মুহম্মদ (সা.)। সেসময় আল্লাহ তা’আলা তাঁর প্রতি সূরা আল-মায়েদার একটি আয়াত নাযিল করেন- আজ আমি তোমাদের দ্বীনকে তোমাদের জন্য পূর্ণ করে দিলাম। আমার নেয়ামতকে তোমাদের উপর পরিপূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্য ধর্ম হিসেবে মনোনীত করে দিলাম।
মহানবী (সা.) এর প্রতি এ আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পর সাহাবীরা অঝোর ধারায় কাঁদতে শুরু করলেন। তখন মহানবী (সা.) তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরা কাঁদ কেন ? সাহাবীরা বললেন, আমরা বুঝতে পারছি অচিরেই আল্লাহ আপনাকে তার মেহমান করে নিবেন। যেহেতু ইসলাম পূর্ণতা পেয়েছে তাই আপনাকে আর আমাদের মাঝে রাখা হবে না। হজ্জ পালন শেষে হযরত মুহম্মদ (সা.) তাঁর সাথীদের নিয়ে মদিনায় চলে আসেন ।
অবশেষে আসে সেই শোকের দিন। শিরঃপীড়ায় আক্রান্ত হন মুহম্মদ (সা.)। তারপর ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল মাসের সোমবার পৃথিবীর মানুষকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে ইন্তেকাল করেন প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদ (সা.)।
প্রতিক্ষণ/এডি/এফটি